পৃথিবীর প্রতিনিধিত্ব করবে কে?
আমরা একটা যাত্রা শুরু করেছিলাম, বাংলা ভাষাভাষীদের কাছে মাতৃভাষায় কার্ল সেগানের কসমসকে পৌঁছে দেয়ার জন্য। অবশেষে আমরা সেই যাত্রার শেষ পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছি। এই পুরো যাত্রায় আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। যদি মুষ্টিবদ্ধ কয়েকজনের কাছেও কসমসকে পরিচিত করাতে পেরে থাকি, তাহলেই আমরা সার্থক। ওরাই এখন কসমসের প্রদীপ হাতে নিয়ে আলোকিত করবে অন্যকেও। মৃত্যুর অনেক বছর পরেও, তাদের মধ্যেই বেঁচে থাকবেন কার্ল সেগান। অশ্রুসিক্ত এই এপিসোডে, সর্বশেষ এপিসোডে, Who Speaks for Earth-এ আপনাদের সবাইকে স্বাগতম!
অনুবাদক
ফরহাদ হোসেন মাসুম
এপিসোড ১৩ বাংলা সাবটাইটেল –
Episode 13 – Who Speaks For Earth, এখানে ক্লিক করে ডাউনলোড করুন
.
সকল এপিসোডের ভিডিও ডাউনলোড লিংক –
কসমস ডাউনলোড লিংক
“আমি স্বর্গ ও মর্ত্যের সকলকে আহবান জানাই, আজকের এই দিনে। আমি তোমাদেরকে দিলাম – জীবন ও মৃত্যু, আশীর্বাদ ও অভিশাপ। অতএব, ‘জীবন’ বেছে নাও, যাতে তোমরা টিকে থাকো, যাতে তোমাদের বংশধরেরা টিকে থাকে।”
এই লাইনগুলো দিয়ে শুরু হলো কসমসের শেষ এপিসোড। আজকের এপিসোডে বিজ্ঞানের চেয়ে ইতিহাস আর আমাদের ভবিষ্যৎ কর্মপন্থাই বেশি প্রকাশ পেয়েছে। মানব সভ্যতা যাচ্ছেতাই করছে নিজের পরিবেশ নিয়ে, নিজের প্রজাতি নিয়ে। মারামারি, হানাহানি চলছে। এ দেশের সাথে ঐ দেশের যুদ্ধ চলছে। এই নেতা ঐ দেশের প্রতিনিধিত্ব করে বিবৃতি দিচ্ছেন, ঐ নেতা করছেন আরেক দেশের প্রতিনিধিত্ব। কিন্তু পৃথিবীর প্রতিনিধিত্ব করছে কে?
এ যেন এক ক্ষ্যাপা বিজ্ঞানীর আহাজারি, পৃথিবীর ব্যাপারে সবার অবহেলা আর উদাসীনতা নিয়ে! আলেকজান্দ্রিয়ার লাইব্রেরি ধ্বংস করা হয়েছিলো, তার শেষ তত্ত্বাবধায়ক হাইপেশিয়াকে অত্যাচার খুন করা হয়েছিলো, হারিয়ে গিয়েছিলো অমূল্য সব জ্ঞান। এমনটা যাতে আবার না হতে পারে, সেজন্য এই ক্ষ্যাপা বিজ্ঞানী সতর্ক হতে বলেছেন সবাইকে। বিজ্ঞানকে সমাজের অংশ করে নিতে বলেছেন।
শেষ এপিসোডে এসে আবার আগের সবকিছু অল্প অল্প করে রিভিশন দিয়ে গেলেন কার্ল সেগান। জরুরি ব্যাপারগুলো আবার মনে করিয়ে দিলেন। প্রাণের বিবর্তন দেখিয়েছেন আবারো। বলেছেন, কিভাবে নক্ষত্র থেকে আমরা এতোটুকু এলাম। প্রাচীন পুরাণ নির্মাতারা বলেছিলেন, আমরা আকাশ আর মাটির সন্তান। কার্ল সেগানও মনে করিয়ে দিলেন, আমরা এই কসমসের সন্তান। কসমস থেকেই আমাদের উৎপত্তি, আমরাই কসমস, এবং আমাদের মাধ্যমেই কসমস নিজেকে দেখছে।
উনি বললেন, “আমাদের টিকে থাকা বা বংশবিস্তার করাটা শুধু নিজেদের খাতিরে নয়, সেই প্রাচীন আর সুবিশাল কসমসের খাতিরেও জরুরি, যার গর্ভে আমাদের জন্ম।” আমাদের দায়িত্ব, কসমসকে জানা। এবং এটা আমাদের অধিকারও বটে। এই যাত্রা অক্ষুণ্ণ রাখতে হলে আমাদেরকে হিংসার বদলে স্নেহ বেছে নিতে হবে, ঘৃণার বদলে ভালোবাসা বেছে নিতে হবে, একে অপরকে সাহায্য করে এগিয়ে যেতে হবে – নক্ষত্রের পানে।
এভাবেই অশ্রসিক্ত চোখে শেষ হবে, কসমসের যাত্রা। ভয়ানক আবেগী হয়ে যাবেন, চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে হবে। কিন্তু লর্ড অফ দ্যা রিংসে জাদুকর গ্যান্ডালফ যেমন বলেছিলেন, Not all tears are evil; তেমনি এই এপিসোড দেখে যদি আপনার অশ্রু বাধা না মানে, বুঝে নেবেন – মনুষ্যত্ব আপনার মধ্যে এখনো বিদ্যমান। আপনি, আমি মিলে তৈরি করতে পারবো সুন্দর এক ভবিষ্যত প্রজন্ম, আবিষ্কার করতে পারবো সুবিশাল এবং অতুলনীয় এই কসমস!
সবাইকে শুভেচ্ছা!
আপনাদের বানানো কার্ল সাগানের কসমস সিরিজের এপিসোড ১৩ এর সাবটাইটেল এ একটু ভুল আছে। ৫৭ মিনিট -৫৮ মিনিট এই সময়ে। এখানে venus মানে শুক্র গ্রহের কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু আপনাদের অনুবাদে শুক্র এর বদলে শনি বলা হচ্ছে। আমি মনে করলাম এটা আপনাদের জানানো দরকার তাই জানালাম। এই বাংলা ভাষায় এই উদ্যোগ নেয়ার জন্য আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। সাইটের সাবটাইটেল ফাইল আপডেট করে দেয়া হয়েছে।