আমাদের জাতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো একটা শক্ত ভিত্তিপ্রস্তরের ওপর – আমরা সবাই সমান। বাস্তবতার পরিবর্তনের সাথে সাথে, সেই ভিত্তিপ্রস্তরের বাণীকে বারবার প্রতিষ্ঠা করাই প্রত্যেক প্রজন্মের দায়িত্ব। এক নিরন্তর প্রচেষ্টা চলতে থাকবে, যাতে এই বাণীটা বারবার নিজের ভিত খুঁজে পায় প্রত্যেক আমেরিকানের জন্যেই।
এই যাত্রার উন্নতি প্রায়ই আসে ছোটো ছোটো পদক্ষেপে। দুই পা সামনে, তো এক পা পেছনে – নিবেদিত নাগরিকদের কঠোর পরিশ্রমে এভাবেই আমরা এগিয়ে যাই। কিন্তু মাঝে মাঝে আজকের মত কিছু দিন আসে – যখন সেই পরিশ্রমগুলোর সম্মিলিত ফল আসে। ন্যায়বিচার আসে বজ্রপাতের মত। আজ সকালে সুপ্রীম কোর্ট বললো, আমাদের সংবিধান বিয়ের সমঅধিকার নিশ্চিত করে; আর প্রত্যেক আমেরিকানই আইনের চোখে সমান। সবাইকে একই চোখে দেখতে হবে – তারা যেই হোক না কেন, যাকেই ভালোবাসুক না কেন।
এই সিদ্ধান্ত আমাদের জোড়াতালি দেয়া সিস্টেমকে সারিয়ে তুলবে। এই সিদ্ধান্ত নিশ্চিত করবে যাতে নিপীড়িত শত হাজার সমকামী যুগলকে আর ভুগতে না হয়। যাতে ভাবতে না হয়, যে “আমাদের বিয়ে কি এক অঙ্গরাজ্যের চোখে বৈধ, অন্য অঙ্গরাজ্যে অবৈধ? আমরা কি ঐ স্টেটে স্থায়ীভাবে যেতে পারবো? অন্তত ঘুরতে যেতে পারবো?” এই সিদ্ধান্ত আমাদের সমাজকে শক্তিশালী করবে। এই সিদ্ধান্ত, সকল সমকামী যুগলের আত্মসম্মান রক্ষা করবে।
দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হবার পরের বক্তৃতায় আমি বলেছিলাম, “যদি আসলেই আমরা সবাই সমান হই, তাহলে আমাদের ভালোবাসাও নিশ্চয়ই সমান হবে।” দেখে খুব ভালো লাগে যে, এই মূলনীতিটাকে ন্যায়বিচারের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত একটা বিজয় – জিম আর ওগোর (মামলার বাদীদের নাম)- এর জন্য, সকল সমকামী পুরুষ ও নারীদের জন্য। নিজেদের মৌলিক নাগরিক অধিকারের জন্য এরা যুদ্ধ করেছে অনেকদিন। এটা সেই সকল সন্তান ও পরিবারদের জন্য বিজয়, যাদেরকে এখন অন্যদের মতই সমান চোখে দেখা হবে।
এই বিজয় তাদেরও, যারা বন্ধু হয়ে ওদের পাশে ছিলেন, যারা ওদেরকে সাহস আর সমর্থন যুগিয়েছেন বছরের পর বছর, এমনকি দশকের পর দশক। আর এই বিজয় আমেরিকার। এই বিজয় সেই সকল আমেরিকানদের যারা তাদের হৃদয়ে ধারণ করেন – যদি আমরা সবাই সমান হই, তাহলে আমরা সবাই একসাথে স্বাধীন। আমার প্রশাসন এই মূলনীতিতেই চলেছে। তাই, আমরা তথাকথিত “Defense of Marriage Act” এর ওপর থেকে সমর্থন তুলে নিয়েছি, এবং খুশি হয়েছি যখন এই বৈষম্যমূলক আইনটাকে ছুঁড়ে ফেলা হয়েছে।
তাই আমরা “DON’T ASK DON’T TELL” নীতি বন্ধ করেছিলাম। ফেডারেল চাকরিজীবিদেরকে আমরা বিবাহজনিত সম্পূর্ণ সুবিধাগুলো দিয়েছিলাম, যেমন – হাসপাতালে LGBT সংগীকে দেখতে যাওয়া। আমরা সত্যিকারের উন্নতি করেছি সমকামীদের অধিকারের ক্ষেত্রে, যেটা কিছুক্ষণ বা কিছুদিন আগেও পুরোপুরি অকল্পনীয় ছিলো।
আমি জানি, আমাদের সমকামী ভাই ও বোনরা ভেবেছেন, পরিবর্তন অনেকদিন ধরেই অত্যন্ত ধীরে চলছে। কিন্তু অন্যান্য অনেক ইস্যুর কথা চিন্তা করলে এই ইস্যুতে আমেরিকা খুব দ্রুত পাল্টেছে নিজেকে। আমি জানি, অনেক দৃঢ়চেতা আমেরিকান এই ব্যাপারে অনেক রকম ধারণা পোষণ করেন। আমি জানি, এক্ষেত্রে অনেকে প্রতিবাদ করেন নিজের অন্তরের গভীরের বিশ্বাস থেকে।
যারা আজকের সংবাদে আনন্দ করছেন, তাদেরও উচিত এই কথাটা মাথায় রাখা, অন্যদের দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপারে সচেতন থাকা। ধর্মীয় স্বাধীনতা যাতে অক্ষুণ্ণ থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখা। কিন্তু সবচেয়ে বড় যে জিনিসটা মাথায় রাখতে হবে, তা হলো – যে ব্যাপার নিয়ে আমরা অনেক দিন অনেক কষ্ট সয়েছি, সেই ব্যাপারেও সত্যিকারের পরিবর্তন সম্ভব। আর যারা আন্দোলন করতে করতে আজ এতোদূর এসেছেন, তাদের দায়িত্ব – পিছিয়ে পড়া অন্যদেরকেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়া। কারণ, সকল পার্থক্যের পরেও আমরা এক জাতি – আর আমরা একত্রেই শক্তিশালী, একা নই। এটা আমাদের চিরকালের গল্প। আমরা বিশাল এবং বৈচিত্র্যময় একটা জাতি।
বিভিন্ন ব্যাকগ্রাউন্ড, ভিন্ন ভিন্ন বিশ্বাস, বিভিন্ন অভিজ্ঞতা, গল্প; অথচ আমাদের আদর্শ একটাই। আপনি যেই হোন, দেখতে যেমনই হোন, যেখান থেকেই শুরু করুন না কেন, যাকে যেভাবেই ভালোবাসুন না কেন, আদর্শটা হচ্ছে – আমেরিকা হচ্ছে সেই জায়গা, যেখানে আপনি নিজের নিয়তি নিজেই লিখতে পারবেন। আমরা বিশ্বাস করি, প্রত্যেকটি শিশুরই নিজের জীবন, স্বাধীনতা, আর সুখের অন্বেষণের অধিকার আছে। এখনো সেই শপথের পথে আরো অনেক কাজ বাকি। কিন্তু আজ, কোনো অনিশ্চিত শব্দ ব্যবহার না করেই বলতে পারি – আমরা বিয়ের নিয়মটাকে আরেকটু নিখুঁত করে তুলতে পেরেছি।
এটা সুপ্রীম কোর্টের সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে, ঠিক। কিন্তু এটা সম্ভব হওয়ার পেছনে আরো ছিলেন মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষের সাহসিকতাপূর্ণ ছোটো ছোটো পদক্ষেপ, যারা রুখে দাঁড়িয়েছেন, নিজেদের কথা স্বীকার করেছেন, মা-বাবার সাথে কথা বলেছেন, যে বাবা-মায়েরা নিজের সন্তানকে ভালোবেসেছেন সবকিছুর উর্ধ্বে গিয়ে। সম্ভব হয়েছে সেই মানুষগুলোর জন্য যারা অপমান সহ্য করেছেন, যন্ত্রণা সয়েছেন, কিন্তু তারপরেও শক্ত ছিলেন, নিজেদের ওপর আস্থা রেখেছিলেন। তারা ধীরে ধীরে পুরো একটা দেশকে বুঝিয়েছেন যে – সকল প্রেমই প্রেম!
কী অসাধারণ সাফল্য! কী চমৎকার উদাহরণ যে সাধারণ মানুষের পক্ষে অসাধারণ কাজ করে দেখানো সম্ভব! ববি কেনেডি একবার একটা কথা বলেছিলেন, সেটার কী চমৎকার একটা স্মৃতিচিহ্ন! বলেছিলেন যে ছোটো ছোটো কাজগুলো হচ্ছে স্থির হ্রদে ছুঁড়ে দেয়া নুড়ি পাথরের মত, যেখানে আশার ঢেউ একসময় বিশাল জলপ্রপাত হয়ে ঝরে পড়ে, পালটে দেয় পৃথিবীটাকে।
সেই অসংখ্য নাম না জানা নায়কদেরকে জানাই – ধন্যবাদ। আজ তাদের জন্য অনেক গর্বের দিন। আজ আমেরিকার জন্য অনেক গর্বের দিন। ধন্যবাদ!
– বারাক ওবামা, ২৬শে জুন, ২০১৫
srt or gip…. file pawwa jabe ki?
যা দেখতেছি সামনে তো পশুকামিও বৈধতা পাবে ওদের দেশে……………।
যেদিন পশু যোগাযোগ করতে পারবে আপনার সাথে, স্বজ্ঞানে সম্মতি দেবে – সেইদিন! এর আগে এসব কথা বলার কোনো মানে নেই। অমুক কাজ করতে দিলে তমুক কাজও হয়ে যাবে, এমন কোনো কথা নেই। মানুষ একটা জন্মালে সে একদিন খুনও করতে পারে, এজন্য জন্মের সময়ই মেরে ফেলতে হবে। কী সব উল্টাপাল্টা যুক্তি দেন আপনারা?
এটা শেষের শুরু। সমকামী জাতি ধ্বংস হওয়ার ইতিহাস আছে পৃথিবীতে। তবুও মানুষ ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয় না। আমি এবং আমার বংশধর সুরক্ষিত থাকুক। শুভকামনা।
sorry, খারাপ মন্তব্য করার জন্য…………।।