একটি তারার জন্ম হলো:
১৯৬৫ সালের নভেম্বর মাসের ২ তারিখ নয়া দিল্লীর তেলওয়ার নার্সিং হোমে একটি অতি সাধারণ ঘটনা ঘটে। হাজারটা নবজাতকের মত আমিও জন্ম নিলাম। এক নার্স আমার মাকে বলেছিলো আমি খুবই ভাগ্যবান। আমি দেবতা হনুমানের আশীর্বাদ নিয়ে জন্মেছি! এটা সত্য কিনা আমি জানি না; এটাতে আমি বিশ্বাস করি কিনা সেটাও জানি না। তবে যদ্দূর আমার মনে পড়ে, এটাই আমার জন্মসংক্রান্ত একমাত্র তথ্য যেটা আমি মা বাবার কাছ থেকে জানতে পেরেছিলাম।
আমরা রাজীন্দ্র নগরে থাকতাম। এমনকি বাড়ির নম্বরটাও আমার মনে আছে, ‘F-442’। আমার প্লে স্কুলের অনেক কথাই আমার মনে আছে। ওই স্কুলটাকে ‘টিনি টটস’ বলে ডাকা হতো। আমাদের বাড়ির একদম পাশেই ছিলো ওটা। এরপর আমি আমার কারিগরী পড়ালেখা শুরু করি ‘S.T Columbus High School’ এ। দিল্লীর গোল নগরের কাছে ছিলো এই স্কুলটা। এটা আইরিস ভাইদের দ্বারা পরিচালিত ছিলো। এর আইন-কানুন খুবই কড়া ছিলো। তবে এখানকার শিক্ষা খুবই উন্নতমানের ছিলো।
আমি আমার স্কুলের প্রথমদিনের কথা মনে করতে পারি। যে শিক্ষিকা আমার ইন্টারভিউ নিয়েছিলেন তাকেও আমি মনে করতে পারি। আমার যিনি ইন্টারভিউ নিয়েছিলেন তিনি হলেন মিসেস বালা। মিসেস বালা আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন আমার বাবার পেশা কী? এখানে বলে রাখা ভালো আমার বাবার ট্রান্সপোর্ট এর ব্যবসা ছিলো। আমি তাকে গাড়ি নিয়ে অন্যদের সাথে কথা বলতে দেখেছি। আমি বিশ্বাস করতাম গাড়ি নিয়ে যে কাজ করে সেই ড্রাইভার। তাই আমি মিস বালাকে উত্তর দিয়েছিলাম ‘আমার বাবা টেম্পু ড্রাইভার’!
মিস বালা আমাকে বলেছিলেন তোমার গাল খুব সুন্দর। এরপর তিনি আমাকে বললেন একটা চুমু দিতে। এটাই ছিলো আমার প্রথম চুমু! আর হ্যাঁ, আমি স্কুলে ভর্তি হয়ে গিয়েছিলাম।
আমাদের সোনালি ও কালো স্টার দেওয়া হতো আচরণ ও ফলাফলের ভিত্তিতে। যে পাঁচটা কালো স্টার পেতো তাকে মিস বালার কাছ থেকে শাস্তি পেতে হতো। আমি দুষ্টু ছিলাম তাই আমি প্রচুর শাস্তি পেয়েছি। আমি মনে করি এখনো আমার জন্যে এরকম ব্যবস্থা থাকলে ভালো হতো।আমার জন্যে শাস্তি পাওয়া আনন্দদায়ক ছিলো! সবমিলিয়ে আমার স্কুলের প্রথম কয়েকটা বছর ভালোই কেটেছিলো।
আমি ক্লাসে অনেক কথা বলতাম। তাই আমাকে প্রায়ই ঠোঁটে হাত দিয়ে এক কোণায় দাঁড়িয়ে থাকতে হতো। আমি মূলত পড়ালেখার থেকে বন্ধুদের সাথে নিজের মনের কথা বলতেই বেশি পছন্দ করতাম। আমার মনে পড়ে আমার শিক্ষিকা আমাকে জোর করে সাঁতার শিখিয়েছিলেন। আমাকে তিনি পানিতে ঠেলে ফেলে দেন। অথৈ পানির মাঝে আমাকে যুদ্ধ করে টিকে থাকতে হয়েছিলো। এরপর আমি সাঁতার কাটা আর সেই শিক্ষকটাকে ঘৃণা করতাম।
তবে এসব কিছুর পরেও এখন আমি আমার শিক্ষক শিক্ষিকাদের ভালোবাসি। তারা দয়ালু এবং মিষ্টি ছিলেন। আমার ধারণা, একজনের পুরো জীবনটাই এই স্কুলের কয়েক বছরে গড়ে ওঠে। এবং আমি বিশ্বাস করি আমার ক্ষেত্রে ওই বছরগুলো সবচেয়ে ভালো কেটেছে।
ছবিঘর: শাহরুখ খানের দুর্লভ কিছু ছবি, পর্ব ০১
বেশ মজার। এসআরকের প্রথম চুমোর কথা জানতে পারলাম। 🙂
“একজনের পুরো জীবনটাই এই স্কুলের কয়েক বছরে গড়ে ওঠে। এবং আমি বিশ্বাস করি আমার ক্ষেত্রে ওই বছরগুলো সবচেয়ে ভালো কেটেছে।” এটা ঠিক বিপরীত আমার ক্ষেত্রে এবং আমার মত হয়তো অন্য অনেক মানুষের ক্ষেত্রে।
চালিয়ে যান।
ধন্যবাদ আপনাকে।?