আমি আমার নিজের গল্পটা বলতে চেয়েছি: চিনুয়া আচেবে

[চিনুয়া আচেবে (আলবার্ট চিনুয়ালুমোগু আচেবে) আফ্রিকার শ্রেষ্ঠ লেখকদের একজন। প্রথম উপন্যাস ‘থিংস ফল অ্যাপার্ট’ লিখে বিশ্বজোড়া খ্যাতি অর্জন করেন। এরপর প্রকাশিত হয় একটি কিশোর উপন্যাসসহ পাঁচটি উপন্যাস, বেশ কিছু কবিতা, একটি ছোট গল্পসংগ্রহ ও একটি প্রবন্ধসংগ্রহ। আচেবের বেশিরভাগ রচনার উপজীব্য বিষয় প্রাক ও উত্তর ঔপনিবেশিক যুগের নাইজেরিয়া। নিজে ইগবো সম্প্রদায়ের লোক। ইগবো-সম্প্রদায়ের তৃণমূল পর্যায় থেকে শুরু করে স্বাধীনতা-পরবর্তী রাজনৈতিক অস্থিরতা, দুর্নীতি ইত্যাদির বিরুদ্ধে উপহাসমিশ্রিত বস্তুনিষ্ঠ পর্যালোচনাই তার উপন্যাসের উদ্দেশ্য। ‘অ্যারো অব গড’ উপন্যাসের জন্য তিনি নিউ স্ট্যটসম্যান অ্যাওয়ার্ড (১৯৬৫) লাভ করেন।]

জেফরি ব্রাউনঃ একটা দীর্ঘ সময় ধরে আফ্রিকানরা তাদের নিজের ইতিহাস বলতে পারেনি। ইউরোপিয়ানরা নিজেদের মত করে আফ্রিকার ইতিহাস লিখেছিলো। ১৯৫০ সাল থেকেই বলা যেতে পারে, যখন আফ্রিকা স্বাধীন হলো, তখন থেকেই আফ্রিকানরা নিজেদের গল্প বলা শুরু করেছিলো। আপনার ‘থিংস ফল অ্যাপার্ট’ বইটির কথাই বলা যেতে পারে- ১৯৫৮ সালে প্রকাশিত হয়েছিলো যা বিশ্বসাহিত্যে একটি উল্লেখযোগ্য স্থান দখল করে নিয়েছে। উপন্যাসটিতে ছিলো নাইজেরিয়ার একটি ছোট গ্রামের গল্প যেখানে ইউরোপিয়ান মিশনারিরা ইগবো আদিবাসীদেরকে তাদের ধর্মপ্রচারের লক্ষ্য হিসেবে বেছে নিয়েছিলো। প্রায় ৫০ বছর আগে আসলে কী ভেবেছিলেন?

আচেবেঃ আমার মনে হয়েছিলো, সত্যিই আমার কিছু একটা করা দরকার।

জে.বি: শুধু মাত্র কিছু একটা করার কথাই ভেবেছিলেন?

আচেবেঃ হ্যাঁ।

জে. বিঃ কী করেছিলেন?

আচেবেঃ আসলে উপন্যাসটিতে আমার নিজের গল্পটা বলতে চেয়েছি। আমার জন্মভূমি, আমার নিজের মানুষের গল্প বলতে চেয়েছি। আমি গল্প বলার জন্য অনেক লোকের কাছেই তখন পরিচিত ছিলাম।

জে.বিঃ তা অবশ্য আপনি ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন বলেই…

আচেবেঃ সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা ছিলো বলেই অনেক লোককে সম্মোহিত করতে পেরেছিলাম। একটা নির্দিষ্ট জায়গায় আমি আমার নিজের অনুপুস্থিতির কথা টের পেলাম। সাজানো বইয়ের তাক থেকে একটা বই সরিয়ে নিলে যেমন ফাঁকা জায়গা তৈরি হয়, আমিও ঠিক সেরকম একটা ফাঁকা জায়গার উপস্থিতি আমার ভিতরে অনুভব করেছিলাম।

জে.বিঃ আর এ কারণেই আপনি থিংস ফল অ্যাপার্ট লিখতে উদ্যত হয়েছিলেন?

আচেবেঃ হ্যাঁ।

জে.বি: তখন কেন আগ্রহী হয়েছিলেন?

আচেবেঃ তখন আমিও একটি পরিবর্তন চেয়েছিলাম। একটি ভিন্ন সংস্কৃতির আগ্রাসনে ইগবোদের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাড়ছিলো, এবং একটা বিশৃঙ্খলা শুরু হতে যাচ্ছিলো।

জে.বি: আপনার বইটিতে অবশ্য ইউরোপিয়ানরা আসার আগে গ্রামের কোনো আদর্শ চিত্র তুলে ধরেননি। উপন্যাসের প্রধান চরিত্র কোনকো চিন্তাশীল কিন্তু হিংসাত্মক। কেন?

আচেবেঃ আমি ইচ্ছাকৃতভাবেই তা করেছি। তখন তরুণ ছিলাম। আমি চেয়েছি সত্যি গল্পটা বলার জন্য। যেভাবে একটা গল্প সত্য হয়ে উঠবে ঠিক সেইভাবে।

জে.বিঃ একটু স্পষ্ট করে বলুন?

আচেবেঃ খুব গভীরভাবেই গল্পটি বলার চেষ্টা করেছি- যেভাবে তুমিও বাস্তব ঘটনা প্রত্যক্ষ করে একটি গল্প তৈরি করতে চাও ঠিক সেভাবেই। সেখানে তোমার একটা নিজস্ব ভঙ্গি থাকবে। তোমার ভিতরে গল্পটির চিত্র ভাসতে থাকবে। এটা সত্য, এটা মিথ্যা। এবং আমি তা পরিহার করতে চেয়েছি। আমি গল্পটিকে একটি উত্তম মাত্রা দিতে চেয়েছি। যা আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিলো।

জে.বিঃ আপনার ধারণায় কোন সময় থেকে ইগবোদের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছিলো? এটা কি ধর্মকে কেন্দ্র করেই প্রথমে শুরু হয়েছিলো?

আচেবেঃ হ্যাঁ।

জে.বিঃ আমি খুব চমকে উঠেছি এটা জেনে যে আপনার বাবা-মা খ্রিস্টান ধর্মে রূপান্তরিত হয়েছিলেন। এবং তখন থেকেই মিশনারিরা সারাদেশ ভ্রমণ করতে শুরু করে।

আচেবেঃ আমি বিষয়টিক প্রশ্নবিদ্ধ করিনি । আমি বিদেশীদের ধর্ম দ্বারা প্রভাবিত হয়েছি বটে। আমি ভেবেছিলাম খ্রিস্টান ধর্ম আমাদের জন্য মঙ্গল নিয়ে আসবে। কিন্তু কিছু সময় পর বুঝতে পারলাম এই ধর্ম সম্পর্কে আমি যা ধারণা করেছি তা আসলে পুরোপুরি ঠিক ছিলো না । ইগবো ধর্মকে বোঝার কোনো প্রচেষ্টাই আমার মধ্যে তখন তৈরি হয়ে ওঠেনি।

জে.বিঃ আপনাকে একটা প্রশ্ন জিজ্ঞেস করা খুব হাস্যকর হবে মনে হয়, আসলে আপনি কি করে বুঝতে পারলেন ‘থিংস ফল অ্যাপার্ট’ বইটি অনেক জনপ্রিয়তা পেয়েছে?

আচেবেঃ না, আমি সত্যিই জানতে পারিনি তা কতটা জনপ্রিয়তা পেয়েছে। আমি শুধু ধারণা করেছি- বিদেশী কিছু পাঠক আমাকে জানিয়েছেন যে তারা বইটি পড়ে এমন কিছু পেয়েছেন যা তাদের নিজেদের ইতিহাসের সাথে একেবারে মিলে যায়। একটা উদাহরণ হলো, কোরিয়ান জনৈক মহিলা কলেজ শিক্ষিকা আমাকে অনেক চিঠি পাঠিয়েছিলেন। তিনি এবং তাঁর কলেজের অনেক শিক্ষকবৃন্দ সবাই আমাকে চিঠিতে জানিয়েছিলেন – ‘এ ইতিহাস তাদের নিজেদের ইতিহাস।’

জে.বিঃ কোরিয়ানরাও?

আচেবেঃ হ্যাঁ। কোরিয়াতে যখন জাপানের উপনিবেশ ছিলো তখন একই রকম ঘটেছিলো তাদের সাথে। আসলে বইটিতে মানব ইতিহাসের এক চিরন্তন রূপ ছিলো যা অন্য জাতির মধ্যেও প্রভাব ফেলবে। অন্য জাতিকেও নাড়া দেবে।

জে.বিঃ আফ্রিকার সব গল্পই ইউরোপিয়ানরা তাদের মত করে বলেছে। তাদের সুবিধা মত করে লিখেছে। আপনিও কি তাই মনে করেন?

আচেবেঃ হ্যাঁ তাই। তারা শুধু আফ্রিকার গল্পই বলে গেছে। গভীর ভাবে সেখানেকার সত্যকে তুলে ধরতে চায়নি। এর একটা কারণ, তাদের দাস বাণিজ্য টিকিয়ে রাখা।

জে.বিঃ বর্তমানে সমস্যাটা কোথায়?  আপনি কি আফ্রিকার বর্তমান অবস্থা নিয়ে সন্তুষ্ট?

আচেবেঃ আসলে এটা একটা প্রস্তুতি ছিলো। হয়ত আরো সময় লাগবে। থিংস ফল অ্যাপার্ট পড়ে সত্যি যদি কেউ তাদের নিজেদের গল্প বলতে চায়, আফ্রিকার গল্প বলতে চায়, ইগবোদের গল্প বলতে চায়, তাহলে সত্যি সেটা আমার কাছে অনেক আনন্দের মনে হবে।

এহলিং: ‘থিংস ফল অ্যাপার্ট’ অথবা ‘এরো অফ গড’  উপন্যাসে আপনি দেখাতে চেয়েছেন ঔপনিবেশিক বহিরাক্রমণের সময়ে একটা পরিবর্তনের প্রয়োজন ছিলো। আসলে যেরকম পরিবর্তন প্রয়োজন ছিলো সেরকম হয়নি। যতটুকু হয়েছে তা আসলে ঔপনিবেশিক বহিরাক্রমণকে কোথায় নিয়ে গিয়েছিলো?

আচেবেঃ আমাদের ইতিহাসে এমন কোনো সময় ছিলো না যা পুরোপুরি নিখুঁত ছিলো। আমি এরকম সময়ের প্রত্যাশাও করি না। কিন্তু আমার মনে হয় প্রতিটি প্রজন্মকেই একটা পরীক্ষার ভিতর দিয়ে যাওয়া উচিত। আসলে যা করা দরকার, তা হলো – তাদের অবস্থানের উপর ভিত্তি করে একটি পরিবর্তনের দিকে আগানো উচিত। এবং এটা সত্যি যে, এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্ম একই রকম হবে না । ফ্রান্সিস ফানো বলেছেন- ‘পরিস্থিতি যাই ঘটুক না কেন, প্রতিটি প্রজন্মকে তার নিজের লক্ষ্য খুঁজে নিয়ে সে অনুযায়ী আগানো উচিত। এটা এমন কিছু নয় যে তুমি দেওয়ালে লিখে লোকজনকে জানালে যে এমন করা উচিৎ, অমন করা উচিৎ। প্রতিটি প্রজন্মকেই আবিষ্কার করে নিতে হবে তাদের কী করা প্রয়োজন।’

এহলিং: আপনি আসলে কবে থেকে লেখা-লেখি শুরু করেছিলেন?

আচেবেঃ আমি আসলে অনেকবার এই প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে উঠার পর থেকেই গুরুত্বসহকারে লেখালেখি শুরু করি। আমি কখনো লেখালেখিকে আমার পেশা হিসেবে বেছে নিবো এটা কল্পনাও করিনি। তবে আমি লেখালেখি দিয়ে কিছু একটা করার চেষ্টা করেছি। আমার পড়াশোনার পাশাপাশি কিছু একটা করা দরকার ছিলো, আমি তাই করেছি। এটা সহজাতভাবেই আমার মধ্যে জন্ম নিয়েছিলো। আমার মনে হয় তুমি যতই বেড়ে উঠতে থাকবে, তোমার চারপাশকে নিয়ে প্রশ্নের সন্মুখীন হবে, আর সেগুলোর উত্তর খোঁজার চেষ্টা করবে। তুমি সত্যি খুব ধাঁধার মধ্যে পড়ে যাবে। কেন এটা ঘটছে, কেনই বা অন্যটা ঘটছে না – এই প্রশ্নের উত্তর গুলো তুমি লেখালেখির মধ্যে দিয়ে খুঁজতে চেষ্টা করবে। আমি জানি না ঠিক কবে থেকে, তবে এটা আমার মনে হতো যে একটি গল্প মানুষের জীবনে খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমি হয়ত ব্যাখ্যা করে শেষ করতে পারবো না কেন!  তবে এটা সত্যি যে একটি গল্পের মধ্যে তুমি তোমার নিজেকে আবিষ্কার করবে। যেখানে একটি সংস্কৃতি নির্ণয় করে আসলে মূল জিনিসটা কী। আমি যখন মেডিকেলে পড়ার জন্য কলেজে যাই, এক বছর পর সেখান থেকে পালিয়ে গিয়েছিলাম; কারণ আমি এরকম জীবন এর আগে কখনো দেখিনি। কী রকম গুরুত্বপূর্ণ জীবন! এবং আমি সেখানে যা কিছু করছিলাম তার সবই গুরুত্বপূর্ণ ছিলো। আসলে তখনি আমি লেখালেখি শুরু করি।

এহলিং : গল্প বলতে আপনি কি চিরাচরিত গল্পের কথা বলছেন?

আচেবেঃ হ্যাঁ।

এহলিং: এটা কি শিল্পের জন্য শিল্প নয়?

আচেবেঃ যতদূর পর্যন্ত একজন মানুষ তা গ্রহণ করতে সক্ষম হবে। আসলে আমি নীতিমূলক অর্থে বলেছি। গল্পকার তাদের শ্রোতাদের শিক্ষা দেবে। তাদের সংস্কৃতি নিয়ে, জাতিকে নিয়ে দেশের জনগনকে নিয়ে, ভাল আর মন্দের কথা বলবে।

এহলিং: আপনি কি দৃঢ়তার সঙ্গে এটা বলতে পারবেন যে, আপনার লেখায় আপনি সেই নীতিমূলক শিক্ষাটা দিতে পেরেছেন?

আচেবেঃ না, আমার ধারণা নীতিমূলক শব্দটিকে মাঝে মাঝে খারাপ অর্থেও ব্যবহার করা হয়। আমি সাধারণত এটা বলতে চাই, শিল্প আমাদের জন্যই, পৃথিবীর একটি নির্দিষ্ট মানে তৈরি করতে এর প্রয়োজন। এবং আমি বলবো প্রতিটি গল্পই শেষমেশ আমাদের ভাল কিছু একটা শিক্ষা দেয়। একারনেই আমি বলতে চাই একজন ঔপন্যাসিক একজন শিক্ষকও বটে। এ কারণেই আমি প্রতিনিয়ত নীতির সাথে থাকার চেষ্টা করি। এই শিক্ষকের মানে এই নয় যে কেউ একজন খড়িমাটি নিয়ে ব্ল্যাকবোর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে একজন শিশুকে এঁকে শিখাবে। আমি এরকম শিক্ষকের কথা বলিনি। আমি এর চেয়ে কম অধিগম্য কিছু বোঝানোর চেষ্টা করছি। আমি প্রকৃতপক্ষে এটা দেখতে চাই না যে অন্য মাধ্যমের চেয়ে শিল্প-সাহিত্য আমাদের কতটা উন্নত করতে চেষ্টা করে, আমি দেখতে চাই শিল্প কিভাবে আমাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে তুলে ধরতে চায়।

ময়ার্সঃ আপনি একটা নির্দিষ্ট সময় উপন্যাস লেখার জন্য ঘুরে বেড়িয়েছেন এবং শিশুদের জন্যও লেখার চেষ্টা করেছেন…

আচেবেঃ আমার মনে হয়েছে তা খুব গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন জায়গা ঘুরতে গিয়ে আমার অনেক নতুন অভিজ্ঞতা হয়েছিলো যা আমাদের শিশুদের আসন্ন বিপদ সম্পর্কে একরকম ধারণা দিবে। আমরা আসলে আমাদের শিশুদের গল্প বলতে চাই না। আমাদের বাবা মা তা করেছিলো। আমাদের দাদারাও তা করেছিলো। যখন থেকে গল্প লেখা শুরু হলো, আমরা সত্যি আমাদের শিশুদের কথা ভুলে গিয়েছি। আমাদের গল্প বলার যে দায়িত্ব তার কথা ভুলে গিয়েছি।

ময়ার্সঃ এই গল্প বলার মধ্যে দিয়ে প্রকৃত অর্থে কী ঘটবে? কোনো পরিবর্তন আসবে কি?

আচেবেঃ যা ঘটবে, তা ঘটাবে কতগুলো বাজে গল্প। আবর্জনা! এগুলো বিষের মত। আমরা বাজারে গিয়ে কতগুলো রঙ্গিন ছবিওয়ালা বই নিয়ে আসি যার ভিতরে কোনো গল্প নেই। আমরা অনেক কম বয়সী, আমাদের তেমন কোনো অভিজ্ঞতা হয়নি যা আমাদের বাচ্চাদের বলতে পারবো। আমরা কখনো শিশুদের গল্প গুলো পড়ে দেখি না। তখন হঠাৎ করেই আমরা আমাদের বাচ্চাদের অদ্ভুত ধারণার কথা লক্ষ্য করি।

এহলিং: থিংস ফল অ্যাপার্ট বইটি কিভাবে প্রথম প্রকাশ করেছিলেন?

আচেবেঃ আসলে অনেক সুখের ঘটনা ঘটেছিলো তখন। বিবিসিতে আমি প্রথম আমার পাণ্ডুলিপি পাঠিয়েছিলাম। সেখানে গিলবার্ট ফেল্পস নামের এক ভদ্রলোক ছিলেন, তার কিছু উপন্যাস বের হয়েছিলো। আমি প্রথম তাকে আমার পাণ্ডুলিপি দেখাই। এক বন্ধুর অনুপ্রেরণায় পান্ডুলিপিটি পাঠিয়েছিলাম। শেষে তিনি পাণ্ডুলিপিটি পছন্দ করেছিলেন। তবে অতটা স্পষ্ট করে ছাপানোর কথা কিছু বলেননি। অবশেষে তিনি সম্পাদককে রাজি করে ছাপাতে রাজি হয়েছিলেন।

এহলিং: বইটি প্রকাশের পর নাইজেরিয়ায় কেমন প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছিলো?

আচেবেঃ আসলে খুব ধীরেই নাইজেরিয়ানদের প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছিলো। কেননা সেটা প্রকাশিত হয়েছিলো লন্ডনে। শুরুতে বইটি অতটা জনপ্রিয়তা না পেলেও ধীরে ধীরে অনেকেই বইটি পড়তে শুরু করে। যতদিন পর্যন্ত না তার পাতলা মলাটের সংকলন বের হয়েছিলো।

এহলিং: আপনার বইটি এখনো অনেক উপরের তালিকায় আছে। যে কেউ আফ্রিকার ইতিহাস জানতে চাইলে তারা এই বইটি পড়ার চেষ্টা করে। আপনার কি মনে হয় এর চেয়ে নির্ভরযোগ্য কোনো বই ভবিষ্যতে হতে পারে?

আচেবেঃ আমি এটা বলতে পারবো না এরকম আর কোনো বই আসবে কি না। কিছু কিছু স্কটিশ পণ্ডিতরা বলেছেন, থিংস ফল এপার্টের মত বই গত বিংশ শতকে প্রকাশিত হয়নি।

প্রত্যুত্তর দিন

আপনার ইমেইল প্রকাশিত হবে না। Required fields are marked *