দ্বিতীয়বারের মত অস্কার জিতে নিলেন ইরানি চলচ্চিত্র পরিচালক আসগর ফরহাদি। নমিনেশন পাওয়ার পরেই অনেকের মনে দুশ্চিন্তা হয়েছিলো, তিনি আসতে পারবেন তো? কারণ কদিন আগেই যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ইরানসহ মোট ৭টি দেশের ওপর ভ্রমণ নিষিদ্ধকরণের এক্সিকিউটিভ অর্ডার চাপিয়ে দিয়েছে। আদালাত সেটাকে বাতিল করে দিয়েছে, কিন্তু এরপরেও আসগর ফরহাদি আসেননি। কারণ, সেই দেশগুলোর অনেকেই ঐ সময়ে ঢুকতে পারেনি, এখনো পারছে না। উদ্বাস্তুদের অবস্থা বেশ শোচনীয়। তার অস্কার বক্তৃতায় সবই উঠে এসেছে। সেই বক্তৃতাটা অনুবাদ করে ফেললাম।
“মূল্যবান এই পুরস্কারটা দ্বিতীয়বারের মত পাওয়া বেশ সম্মানের ব্যাপার। এই সুযোগে একাডেমির সদস্যদেরকে, ইরানে আমার সহকর্মীদেরকে, আমার প্রযোজক আলেহান্দ্রে ম্যালেট-গাইকে, কোয়েন মিডিয়া, এমাজন, এবং বিদেশি ফিল্ম ক্যাটাগরিতে নমিনেশন পাওয়া অন্যান্যদেরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
আমি আজ রাতে আপনাদের সাথে নেই বলে দুঃখিত। আমি আসিনি, আমার দেশের মানুষের প্রতি সম্মান রেখে, এবং আরো ছয়টা দেশের মানুষের প্রতি সম্মান রেখে; যাদেরকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী প্রবেশ নিষিদ্ধকরণের মত অমানবিক আইনের শেকলে বেঁধে অপমানিত করা হয়েছে। আমরা আর ওরা, এই দুই শ্রেণীতে বিভক্ত করলে শুধু আতংকই ছড়ানো হয়, আগ্রাসন আর যুদ্ধের জন্য এক ধরনের প্রতারণাপূর্ণ নায্যতা তৈরি করা হয়। এই যুদ্ধ গণতন্ত্রকে ক্ষুণ্ণ করে; যারা নিজের দেশেই আগ্রাসনের শিকার, তাদের মানবাধিকারকে ক্ষুণ্ণ করে।
আমরা সবাই প্রজাতি হিসেবে যে চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলো ধারণ করি, চলচ্চিত্র নির্মাতারা তাদের ক্যামেরার মুখ ঘুরিয়ে সেই বৈশিষ্ট্যগুলোকে তুলে ধরতে পারেন; বিভিন্ন জাতীয়তা আর ধর্মের ভ্রান্ত ধারণাগুলোকে ভেঙে টুকরো টুকরো করে দিতে পারেন। ওরা “আমাদের আর ওদের” মধ্যে সহমর্মিতা জাগাতে পারেন। আর এই সহমর্মিতাটুকু অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে এখন বেশি দরকার।”
আরো পড়তে পারেন,
অসাধারন বক্তৃতায় আমি মুগ্ধ।