১৯৬৫ সালের একদিন চতুর্থ শ্রেণীর একজন শিক্ষিকা আমার কাছে এলো, তখন আমি সিয়াটেলের ভিউ রিজ স্কুলে লাইব্রেরিয়ান। তার সাথে একজন ছাত্র ছিল যে কিনা অন্য সবার আগেই নিজের সব কাজ শেষ করেছে, তাই তার নতুন কোনো কাজ দরকার। শিক্ষিকা জানতে চাইলেন, ছাত্রটি লাইব্রেরিতে কাজ করতে পারবে কিনা? আমি ছেলেটিকে লাইব্রেরিতে আসতে বললাম।
কিছুক্ষণ পরেই জিন্স এবং টি-শার্ট পরা চুলে ধুলাবালি মাখা ছেলেটি এসে পৌঁছালো। সে জানতে চাইলো, তার জন্য কোনো চাকরি আছে কিনা?
তাকে ডুউই ডেসিমাল সিস্টেম (Dewey Decimal System) সম্পর্কে বুঝিয়ে বললাম। সে তৎক্ষণাৎ সহজেই পদ্ধতিটি শিখে নিল। তারপর আমি তাকে দীর্ঘদিন যাবৎ ফেরত না দেয়া বইয়ের কার্ডের স্তুপ দেখিয়ে দিলাম, যেইগুলোকে আমি চিন্তা করতে শুরু করেছিলাম আসলে ফেরত দেয়া হয়েছে কিন্তু বইগুলো ভুল কার্ডের মাধ্যমে ভুল তাকে রাখা হয়েছে। সে জানতে চাইলো, এটা কোন গোয়েন্দাগিরি ধরনের কাজ কিনা? আমি হ্যাঁ সূচক উত্তর দিলাম। সে একজন ক্লান্তিহীন অনুসন্ধানকারী হয়ে ওঠে। শিক্ষিকা ছুটি দেয়ার আগেই সে ভুল কার্ডের তিনটি বই খুঁজে বের করে ফেলে। সে কাজটা শেষ করতে যুক্তি দেখাতে থাকে এবং শেষে শিক্ষিকার কথাই মেনে নেয়।
পরের দিন সে খুব সকালে লাইব্রেরিতে আসে। বলে, “আমি বাকি বইগুলো খুঁজে বের করতে চাই”। দিন শেষে সে একজন নিয়মিত গ্রন্থাগারিক হতে চাইলে তাকে অনুমতি দেই। সে অবিশ্রান্তভাবে কাজ করতে থাকে।
কয়েক সপ্তাহ পরে আমার ডেস্কের উপর ছেলেটির বাসায় রাতের খাবারের আমন্ত্রণ এর চিঠি পাই। একটি সুন্দর সন্ধ্যা শেষে, তার মা ঘোষণা করলো যে তাদের পরিবার জেলা স্কুল সংলগ্ন এলাকায় চলে যাবে। তিনি বললেন, তার ছেলের প্রথম চিন্তা হলো – ভিউ রিজ লাইব্রেরি ছেড়ে যাওয়া। সে জানতে চাইছিলো, সে চলে গেলে হারিয়ে যাওয়া বই কে খুঁজবে?
দেরি হয়ে যাচ্ছিলো দেখে অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাকে বিদায় জানালাম। প্রথমে তাকে একজন সাধারণ বালক মনে হলেও, তার প্রবল উদ্দীপনা তাকে অন্যদের থেকে আলাদা করেছিলো।
আমি তার অভাব অনুভব করতাম, কিন্তু বেশীদিনের জন্য নয়। কিছুদিন পরেই সে দরজায় এসে দাঁড়িয়ে আনন্দের সাথে জানাল, “ঐখানকার গ্রন্থাগারিক ছেলেদেরকে লাইব্রেরিতে কাজ করতে দেয় না। আমার মা আমাকে পুনরায় ভিউ রিজ স্কুলে নিয়ে এসেছে। বাবা কাজ করতে যাওয়ার পথে আমাকে রেখে যাবে। সে যদি না পারে, তাহলে আমি হেঁটে আসবো!”
আমার আভাস পাওয়া উচিৎ যে এমন দৃঢ়দৃষ্টি ও সংকল্প সম্পূর্ণ যুবক সেখানেই যেতে পারবে যেখানে সে যেতে চায়। যাই হোক, আমি অনুমানও করতে পারিনি ছেলেটি একদিন ইনফরমেশন যুগের জাদুকর হিসেবে প্রতীয়মান হবে। সেই হবে মাইক্রোসফট এর টাইকুন এবং আমেরিকার সবচে ধনী ব্যক্তি- বিল গেটস।
ধন্যবাদ, অনুবাদকের আড্ডা।
ভাল অনুবাদ।এরকম আরো চাই।
এরকম আরো চাই।