দ্যা আলকেমিস্ট পাওলো কোয়েলোর লেখা প্রথম বই, প্রকাশিত হয়েছিলো ১৯৮৮ সালে। ২০২৩ সালে ফরহাদ হোসেন মাসুমের অনুবাদে, আদর্শ প্রকাশনী থেকে, এই বেস্টসেলার বইটির বাংলা অনুবাদ প্রকাশিত হয়।
সংগ্রহ করুন দ্যা আলকেমিস্ট (প্রাপ্তিস্থান)
মুখবন্ধ এবং দুটো অধ্যায়ের অনুবাদ
লেখকের কথা – দশ বছর পর
আমেরিকান প্রকাশক হার্পার কলিন্স থেকে একবার একটা চিঠি পেলাম। চিঠিতে লেখা ছিলো, “পুরো পৃথিবী ঘুমিয়ে আছে, শুধু আমি জলদি উঠে সূর্যোদয় দেখছি – আলকেমিস্ট পড়ার অনুভূতিটা একদম সেই রকম।”
আমি ঘর থেকে বের হলাম, মাথা তুলে আকাশের দিকে চোখ মেললাম, আর নিজেকে নিজে বললাম, “তো বইটা তাহলে ইংরেজিতেও প্রকাশ হচ্ছে।” তখন আমি নিজেকে লেখক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য খুব সংগ্রাম করছিলাম। চারপাশ থেকে অনেক বার “তোমার দ্বারা সম্ভব না” শোনার পরেও লেগে ছিলাম।
ধীরে ধীরে স্বপ্নটা সত্যি হতে লাগলো। দশ, একশো, হাজার, লক্ষ কপি বিক্রি হয়ে গেলো আমেরিকাতেই। একদিন এক ব্রাজিলিয়ান সাংবাদিক ফোন করে জানালো – প্রেসিডেন্ট ক্লিন্টনকে এই বই পড়তে দেখা গেছে, ছবিও আছে। কদিন পর আমি তুরস্কে বসে ভ্যানিটি ফেয়ার ম্যাগাজিনটার পাতা ওল্টাতে গিয়ে দেখলাম, জুলিয়া রবার্টস বলছেন যে তিনি বইটাকে অত্যন্ত পছন্দ করেছেন। মায়ামির রাস্তা ধরে একা একা হাঁটছিলাম। তখন শুনতে পেলাম একটা ছোট্ট মেয়ে তার মাকে বলছে, “মা, দ্যা আলকেমিস্ট তো তোমাকে পড়তেই হবে।”
বইটা ছাপ্পানটি ভাষায় অনুবাদ হয়েছে, দুই কোটির বেশি কপি বিক্রি হয়েছে, মানুষ আমাকে জিজ্ঞেস করা শুরু করেছে, “এই ব্যাপক সাফল্যের রহস্যটা কী?”
সত্যি বলতে – আমি জানি না। শুধু এটুকু বলতে পারি – রাখাল বালক সান্তিয়াগোর মত আমাদের সবারই হয়তো অন্তরের ডাকটা শোনা উচিত। অন্তরের ডাক বলতে কী বোঝাচ্ছি, জানতে চান? এটা ঈশ্বরের আশীর্বাদ; ঈশ্বর আপনার জন্য যে পথটা ঠিক করেছেন, এটা সেই পথ। যখনই কোনো কাজ করতে গিয়ে মন আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে ওঠে, সেটাই আমাদের ধ্রুবতারা।
অবশ্য, আমাদের সবার মধ্যে নিজেদের স্বপ্নের পিছু নেয়ার সাহস থাকে না। এর পেছনে চারটা প্রতিবন্ধকতা আছে। এক, ছোটোবেলা থেকেই আমাদেরকে শেখানো হয় যে আমরা যা চাই, তা আসলে সম্ভব না। এই ধারণাটা নিয়েই আমরা বেড়ে উঠি। বয়সের সাথে সাথে বাড়তে থাকে কুসংস্কার, ভয়, আর অনুশোচনা। একসময় অন্তরের ডাকটা এতো গভীরে চাপা পড়ে যায় যে, সেটার অস্তিত্বই অদৃশ্য মনে হয়; যদিও সেটা বিলীন হয়ে যায় না কখনোই।
স্বপ্ন খুঁড়ে বের করে নিয়ে আসতে পারলে আপনি সম্মুখীন হবেন দ্বিতীয় প্রতিবন্ধকতার – ভালোবাসা। আমরা জানি আমাদেরকে কী করতে হবে, কিন্তু সেটা করতে গিয়ে আমরা প্রিয়জনদের মনে কষ্ট দিতে চাই না। আমরা এটা বুঝি না যে ভালোবাসা জিনিসটা আসলে প্রেরণা, প্রতিবন্ধকতা নয়। আমরা এটা বুঝি না যে, যারা আসলেই আমাদের শুভাকাঙ্ক্ষী, তারা কিন্তু চায় যে আমরা সুখী হই; তারা আমাদের স্বপ্নযাত্রায় শরীক হতে চায়, সাহায্য করতে চায়।
ভালোবাসাকে অনুপ্রেরণা হিসেবে স্বীকার করে নিতে পারলে সামনে আসে তৃতীয় প্রতিবন্ধকতা – পরাজয়ের ভয়। নিজেদের স্বপ্নের জন্য যারা দিনরাত এক করে দেয়, ব্যর্থ হলে তারাই কিন্তু সবচেয়ে বেশি কষ্ট পায়। অন্যদের মত তারা এটা বলতে পারে না যে, “ধুর, এটা না পেলেও আমার চলে।”
না, ওটা না পেলে আমাদের চলে না। ঐ স্বপ্নের পেছনে আমরা সবকিছু বাজি ধরে ফেলি। রাস্তাটা কঠিন, অন্য সব রাস্তার মতই কঠিন। পার্থক্যটা হচ্ছে, অন্য রাস্তাগুলোর জন্য আমরা নিজেদেরকে উৎসর্গ করে দেইনি। আমাদের মত স্বপ্নযাত্রীদেরকে কঠিন সময়ে ধৈর্য ধরতে হয়। নিজেকে শোনাতে হয়, “পুরো মহাবিশ্ব তোমার স্বপ্ন পূরণের জন্য সাহায্য করছে”; যদিও ঠিক বুঝ পাই না কীভাবে।
আমি নিজেকে মাঝে মাঝে প্রশ্ন করি, “ব্যর্থতা জিনিসটা কি আদৌ কোনো কাজে লাগে?”
প্রয়োজনীয় হোক বা না হোক, ব্যর্থতা আসেই। স্বপ্নের রাস্তায় যখন প্রথম দু কদম ফেলি, তখন আমরা শিশু, বারবার আছড়ে পড়ি। সাফল্যের সূত্র হচ্ছে, সাতবার আছাড় খেলেও আরেকবার উঠে দাঁড়ানো।
কষ্ট যদি অন্যদের চেয়ে বেশিই পাই, তাহলে অন্তরের ডাক শোনার দরকারটা কী? কারণ, একসময় আমরা পরাজয়কে হার মানতে বাধ্য করি; আর তখন আমরা যে আনন্দ আর আত্মবিশ্বাস পাই, সেটার সাথে আর কোনোকিছুরই তুলনা চলে না। আমাদের হৃদয়ের সুনসান আস্তানায় তখন প্রতিধ্বনিত হয়, এটাই জীবনের মুজিযা। প্রতিটা দিন, প্রত্যেকটা ঘণ্টা, আমরা সেই উদ্দেশ্যে ছুটতে থাকি। আমাদের জীবন ভরে ওঠে উৎসাহ আর আনন্দে।
তীব্র, অপ্রত্যাশিত কষ্টগুলো আসে হঠাৎ করে, চলেও যায় দ্রুত। যে কষ্টগুলো প্রথম দেখায় সহনীয় মনে হয়, সেগুলোই বরং রয়ে যায় দীর্ঘকাল। নিজের অজান্তে, সেগুলো আমাদেরকে কুরে কুরে খেতে থাকে বছরের পর বছর। বহুদিন পর উপলব্ধি করি, সেই তিক্ততা থেকে মুক্তি পাওয়া আর সম্ভব নয়; এই গ্লানি এখন আমার সারা জীবনের সঙ্গী।
অন্তরের ডাক আবিষ্কার করলাম, ভালোবাসার শক্তি দিয়ে সেটাকে পুষ্ট করলাম, পরাজয়ের ভয় ডিঙিয়ে আঘাতের পর আঘাত সহ্য করে এগিয়ে গেলাম। হঠাৎ একদিন আবিষ্কার করলাম, মনজিল দেখা যাচ্ছে; গন্তব্য আর বেশি দূরে নেই, হয়তো কালকে নাগাদ পৌঁছে যাবো। তখন আসে চতুর্থ প্রতিবন্ধকতা – জয়ের ভয়; যেটার জন্য সারা জীবন লড়াই করলাম, সেটা পেয়ে গেলে কী হবে, সেই আশংকা।
অস্কার ওয়াইল্ড বলেছিলেন, “প্রত্যেকেই নিজের ভালোবাসার বস্তুকে নিজ হাতে হত্যা করে”। কথাটা মিথ্যে নয়। নিজের আকাঙ্ক্ষার বস্তুটা পেয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা সাধারণ মানুষের মনে কিছুটা হলেও অপরাধবোধ তৈরি করে। চারপাশে হাজার হাজার মানুষ নিজেদের স্বপ্নে ব্যর্থ হয়ে ঘুরপাক খাচ্ছে, তাদেরকে দেখলে মনে হয় – এই সাফল্য বুঝি আমারও প্রাপ্য নয়, আমি এই সাফল্যের উপযুক্ত নই। আমরা পার করে আসা সব প্রতিবন্ধকতা ভুলে যাই, সব কষ্ট মন থেকে মুছে ফেলি, ভুলে যাই সব আত্মত্যাগ। আমি এমন অনেকজনকে চিনি যারা তাদের লক্ষ্য থেকে মাত্র এক কদম দূরে ছিলেন, আরেকটু হলেই যাদের হাতে সাফল্য ধরা দিতো, তখনই তারা একের পর এক ভুল কদম ফেলেন।
এই প্রতিবন্ধকতাটাই সবচেয়ে ভয়ংকর, কারণ এটার মধ্যে এক ধরনের সন্ন্যাসবাদী আদর্শ লুকিয়ে আছে – আনন্দ বলিদান দাও, বিজয় কুরবানি করো। কিন্তু আপনি যদি নিজেকে সেই লক্ষ্য অর্জনের যোগ্য দাবিদার মনে করেন, তখন আপনি হয়ে ওঠেন ঈশ্বরের বার্তাবাহক, হয়ে ওঠেন এই পৃথিবীর ত্রাণকর্তা। তখন আপনার কাছে ধরা দেয় চিরন্তন সেই প্রশ্নের উত্তর – কেন আমরা এই পৃথিবীতে এলাম?
পাওলো কোয়েলো
রিও ডি জেনিরো, ব্রাজিল
নভেম্বর ২০০২
অনুবাদকের কথা
এই গল্পটা আমাদের সবার জীবনেই একবার হলেও ঘটেছে। লেখক পাওলো কোয়েলো সেটা ভালো করেই জানেন। আমরা সবাই কখনো না কখনো এমন একটা মোড়ে এসে দাঁড়িয়েছি যেখান থেকে স্বপ্নের রাস্তা আর সহজ রাস্তা আলাদা হয়ে গেছে। এই টানাপোড়েনের পাল্লায় পড়ে কেউ সহজ রাস্তা বেছে নিয়েছে, তাদের জীবন কেটে গেছে ঠিকই, কিন্তু তাদের স্বপ্ন আর কোনোদিন বাস্তবায়ন হয়নি। আবার কেউ কেউ স্বপ্নের পথে হেঁটেছে; সফল হোক বা না হোক, ওরা অন্তত এটুকু স্বান্তনা পেয়েছে যে আমরা চেষ্টা করার আগেই হার মেনে নিইনি।
গল্পটা সবার। এজন্যেই মনে হয়, গল্পের নায়কের নাম পুরো উপন্যাসে মাত্র একবার ব্যবহার করেছেন, তাও একদম প্রথম বাক্যে। এরপর প্রত্যেকবার ওকে “The Boy” বা “ছেলেটা” বলেই সম্বোধন করেছেন। আমার মনে হয়, উনি চেয়েছেন যাতে পড়তে গিয়ে পাঠক মূল চরিত্রটাকে কোনো নির্দিষ্ট বর্ণ, গোত্র, বা জাতিগোষ্ঠীতে সীমাবদ্ধ না করে ফেলে। বিশেষ করে ছেলেটা যখন যাত্রা শুরু করে, নিজের পরিচিত এলাকা ছেড়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ে, তখন আপনার-আমার সাথে ওর কোনো পার্থক্য যাতে না থাকে, সেজন্য লেখক সচেতনভাবেই নামের ব্যবহার এড়িয়ে গেছেন বলে আমার ধারণা।
দ্যা আলকেমিস্ট অত্যন্ত জনপ্রিয় একটা বই। এটার বাংলা অনুবাদও আগে থেকেই আছে। তারপরেও কেন আবার অনুবাদ করতে গেলাম?
আমির খান যখন Rang De Basanti সিনেমার জন্য শুটিং করছিলেন, তখন ওনার বোন ওনাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, “এখন কোন সিনেমার কাজ করছিস?”আমির উত্তর দিয়েছিলেন, “ভগত সিং আর চন্দ্রশেখর আজাদকে নিয়ে বানানো পঞ্চম রিমেইক।”ওনার বোন অবাক হয়ে গেলো। আমির বেছে বেছে খুব কম সিনেমায় অভিনয় করেন। সেই জায়গায়, একই সিনেমার পঞ্চম রিমেইক কেন বানাচ্ছেন, এটা নিয়ে অনেক জিজ্ঞাসাবাদ করলো। আমিরের কাছে মনে হয়েছিলো, ফিফথ রিমেইক হলেও সেখানে নতুন কিছু করে দেখানোর সুযোগ আছে।বাজারে আলকেমিস্টের অনুবাদ আছে। একাধিক বাঙলা অনুবাদ আছে হয়তো। তারপরেও আমার কাছে মনে হয়েছে, এখানে নতুন কিছু করে দেখানোর সুযোগ আছে। আশা করি, বিজ্ঞ পাঠকগণ আসল কারণটা ঠিকই বুঝতে পারবেন। আমি আর সেদিকে গেলাম না।
শুধু আশা করি, যাদের স্বপ্ন দেখার সৌভাগ্য হয়েছে, তাদের সবার স্বপ্ন সফল হোক। অন্তত, তাদের সবার মনে স্বপ্নের রাস্তা বেছে নেয়ার সাহস আসুক।
ফরহাদ হোসেন মাসুম
শিকাগো, ইলিনয়, যুক্তরাষ্ট্র
ফেব্রুয়ারি ২০২৩
লেখক পরিচিতি
পাওলো কোয়েলো ব্রাজিলের রিও দে জেনেরো শহরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এখনো সেখানেই বসবাস করেন। ওনার লেখার মূল চরিত্রের মত ওনার কাহিনীও অনেক বৈচিত্র্যময়। ওদের মত, তিনিও স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের যাত্রায় নেমেছিলেন। ওনার লেখক হবার স্বপ্ন বারবার মুখ থুবড়ে পড়েছিলো। এর মাঝে তিনি বেশ কিছু পেশায় যোগ দিয়েছিলেন। তার মধ্যে কিছু কিছু পেশায় টাকাপয়সা ভালোই ছিলো, কিন্তু মনে শান্তি ছিলো না।
উনি বলতেন, “এটা আমি আগে থেকেই জানতাম – লেখালেখি করাই আমার স্বপ্ন, আমার ধ্রুবতারা।” আটত্রিশ বছর বয়সে উনি নিজের প্রথম বই প্রকাশ করেন।
১৯৭০ সালে উনি ঠিক করেছিলেন, ওকালতির পড়াশোনা ওনার পোষাচ্ছে না। তখন তিনি দক্ষিণ আমেরিকা, উত্তর আফ্রিকা, মেক্সিকো, ইউরোপের অনেক জায়গায় ঘুরে বেড়ালেন। দু বছর পর ব্রাজিলে ফিরে এসে, তিনি গীতিকার হিসেবে সফল কর্মজীবন শুরু করলেন।
১৯৭৪ সালে, ব্রাজিলের তৎকালীন একনায়ক সরকার তাকে কারাগারে নিক্ষেপ করেছিলো, বেশিদিনের জন্য না অবশ্য। ১৯৮০ সালে তিনি এমন একটা কাজ করলেন যাতে তার জীবন নতুন মোড় নিলো – তিনি উত্তর-পশ্চিম স্পেনের সান্তিয়াগো দে কম্পোস্তেলা সড়কে ৫০০ মাইলের বেশি পথ হাঁটলেন। এই প্রাচীন মহাসড়ক ধরে ফ্রান্স থেকে অনেকে সেইন্ট জেইমসের গির্জা দেখতে আসতো। উনি এখানে আত্মসচেতনতা এবং আধ্যাত্মিকতা অনুভব করলেন। ওটা নিয়ে তিনি একটা বই লিখেছিলেন পরে, নাম দিয়েছিলেন দ্যা পিলগ্রিমেজ (তীর্থযাত্রা)।
একবার তিনি বলেছিলেন যে নিজের স্বপ্নকে অনুসরণ করা নতুন একটা ভাষা শেখার মত। প্রথমে ভুল করবেন ঠিকই, কিন্তু একসময় গন্তব্যে পৌঁছাবেনই। ১৯৮৮ সালে, তিনি দ্যা আলকেমিস্ট প্রকাশ করলেন। এই উপন্যাসে তিনি এই ভাবটাই তুলে ধরতে চাইলেন। এই বইটা তাকে আন্তর্জাতিক মহলে বিখ্যাত করে তুললো। বিশেষ করে তার গল্প বলার ক্ষমতা আর সেই সাথে উপদেশ বা নীতিকথা মিশিয়ে দেয়ার ভঙ্গি তাকে জনপ্রিয় করে তুললো। আলকেমিস্ট বিশ মিলিয়নের বেশি কপি বিক্রি হয়েছে দুনিয়াজুড়ে, ছাপ্পান্নটা ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে।
পিলগ্রিমেজ আর আলকেমিস্ট ছাড়াও, তিনি জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আরো বেশ কিছু উপন্যাস লিখেছেন, যেমন – বাই দ্যা রিভার পিয়েদ্রা আই স্যাট ডাউন এন্ড ওয়েপ্ট, দ্যা ভ্যালকিরিস, দ্যা ফিফথ মাউন্টেইন, আর ভেরোনিকা ডিসাইডস টু ডাই।
তিনি সাহিত্যের ওপর অনেকগুলো পুরষ্কার পেয়েছেন। তিনি মানবতাবাদ নিয়ে বেশ সোচ্চার। ১৯৯৯ সালে, ডাভোস ইকোনমিক ফোরাম কনফারেন্সে শিল্প জগতে অবদানের জন্য তাকে ক্রিস্ট্যাল এওয়ার্ড দিয়ে পুরষ্কৃত করা হয়।
অনুবাদক পরিচিতি
ফরহাদ হোসেন মাসুম১, পেশায় একজন পরিবেশ বিজ্ঞানী। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের আর্গন ন্যাশনাল ল্যাবরেটরিতে গবেষক হিসেবে কাজ করছেন (সাল ২০২৩)। তার জন্ম চট্টগ্রামে, শৈশব কেটেছে চট্টগ্রাম আর কুমিল্লা মিলিয়ে। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিবেশ বিজ্ঞানে অনার্স করে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দুটো মাস্টার্স (বনবিদ্যা, ফলিত অর্থনীতি) এবং পিএইচডি (বনবিদ্যা এবং প্রাকৃতিক সম্পদ) করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা জনপ্রিয় করার জন্য তিনি এক দশকের বেশি সময় ধরে কাজ করছেন। ২০১১ সালে তিনি NexTop-USA২ (Higher Study in USA) প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ২০১২ সালে উচ্চশিক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ভোকাবুলারির বই VocaBuilder৩ দিয়ে তিনি লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ভোকাবিল্ডার বইটি বেশ কয়েকটি প্ল্যাটফর্মে বেস্টসেলার হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছে। ২০১৪ সালে ‘নেক্সটপ গাইড টু হায়ার স্টাডি ইন ইউএসএ’ বইটিও উচ্চশিক্ষায় উচ্চাকাঙ্ক্ষী মহলে অত্যন্ত জনপ্রিয়।
গবেষণা এবং উচ্চশিক্ষায় অবদানের পাশাপাশি তিনি অনুবাদ এবং বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণে যথেষ্ট সময় দিয়ে থাকেন। ২০১৩ সালে তিনি ‘অনুবাদকদের আড্ডা৪’ এবং ‘বিজ্ঞানযাত্রা৫’ প্রতিষ্ঠা করেছেন। অনুবাদকদের আড্ডা থেকে অনেক প্রবন্ধ, কবিতা, সিনেমা/টিভি সিরিজ এর বাংলা সাবটাইটেল এর পাশাপাশি অনুবাদ গ্রন্থ “শক্তিমান বর্তমান (The Power of Now by Eckart Tolle)” প্রকাশিত হয়েছে। বিজ্ঞানযাত্রা থেকেও বের হয়েছে বিজ্ঞানযাত্রা ম্যাগাজিন ভলিউম ১ এবং ২; পাশাপাশি ওয়েবসাইটে আছে ৫০০ এর বেশি বিজ্ঞানভিত্তিক প্রবন্ধ।
১ www.farhadmasum.com
২ www.nextopusa.com
৩ www.vocabuilder.rocks
৪ www.onubadokderadda.com
৫ www.bigganjatra.org