গরিব লোকটি খাচ্ছে

যদি চিত্রশিল্পী হতাম
আমি নিশ্চিত
এই কবিতার শিরোনামই হতো
আমার সিগনেচার থিম।
স্বেচ্ছাচারী সূর্যটা দৌড়ে ঠিক মাথার উপরে গিয়ে দাঁড়ায়
যেন সে প্রাচ্যের কোনো এক স্বৈরাচার।
গরিব লোকটি হাঁটু গেড়ে তোষামোদের ভঙ্গিতে
অনুকরণ করে টমি হিলফিগারের পুরনো কাপড় খণ্ডে
একটি ন্যাংটো গাছের
মৃতপ্রায় ছায়ার তলে।

সে হাতে আগলে আছে
পোড়া মাটির একটি বোল—
বোলটা কোনো উইজা বোর্ডও হতে পারে
যার মাধ্যমে মন্ত্র পড়ে ভেলকিবাজিতে
শূন্য থেকে নিয়ে আসে আকাঙ্ক্ষিত মণ্ডা মিঠাই।

এবং যখন তাঁরা আসে,
ক্ষুধার্ত লোকটি কীভাবে আছড়ে পড়ে তাঁদের ওপর!
নিগূঢ় একাগ্রতায় নিবদ্ধ চক্ষুদ্বয়
বাম হাতটি শক্ত করে আঁকড়ে আছে
খাবারের গাদাটি,
আর ডান হাত খাবার সেঁটে দিচ্ছে
ক্ষুধার্ত মুখে।

আমি এই দৃশ্যের প্রাণবন্ত তৈল চিত্র আঁকতাম
একবার, দু’বার, বারবারঃ
আমার এই আঁকা ছবি
হয়তো যাদুর মতই দ্রুত ছড়িয়ে পড়তো চারিদিকে,
যা আপাত অসম্ভবকে
বোধগম্য সম্ভবে রূপান্তরিত করতো।

জগতের সকল দরিদ্র
নারী ও পুরুষ জমা হত এই নিম্ন ভূমির নিচু পৃথিবীতে
একটা পৌরাণিক দিনে
ঠিক যেন শেষবিচারের সেই দিনটায়,
গোগ্রাসে গিলতো সব দুনিয়াবি খাবারঃ
ওহ! ঈশ্বরেরা নিচে নেমে আসতো
আশীর্বাদ করতে, ভাগাভাগি করতে!

মূলঃ পুওর ম্যান ইটিং— কায়সার হক

প্রত্যুত্তর দিন

আপনার ইমেইল প্রকাশিত হবে না। Required fields are marked *